Winter

This document is originally written by Mahmud Hasan, M.Sc., Writer & Poet (Western University).


Year of Publication: 2019


©PBSCU Any unauthorized use of this article, including copying or editing is prohibited. If you want to use the article, you need to take permission from us: pbscuadm@gmail.com or from the author and you must mention the author's name and the group's name in all cases.


[বন্ধুবর Muntasir Mamun অনুরোধ করেছেন শীতের দেশ বৃহত্তর খেনাডায় যাঁরা প্রথমবার যাচ্ছেন তাঁদের জন্য কিছু করণীয় বর্জনীয় বিষয় নিয়ে লিখতে। উনি নিজে পরিবার নিয়ে বৃহত্তর খেনাডায় পাড়ি জমাচ্ছেন এই বছরের শেষে, হয়তো তাঁরই এখন বেশি প্রয়োজন এইরকম শীতের দেশে এসে কীভাবে কী করতে হবে সেটা জানার।


আমি তাঁর অনুরোধ পেয়ে একটু কনফিউজড হয়ে গেলাম। বৃহত্তর খেনাডাকে শীতের দেশ হিসেবে সবাই জানে, তবে একে কখনও কখনও shit এর দেশ, তথা হাগুর দেশ বললেও অত্যুক্তি হবে না। যাহোক, সেই কথা বলতে গেলেই একদল তেড়ে আসবেন যে আমি বৃহত্তর খেনাডার বিষয়ে নেতিবাচক কথা বলছি, আরেকদল 'আমি নিজে ইমিগ্র্যান্ট হয়ে ইমিগ্রেশন কন্ট্রোল চাই' শীর্ষক বাণী পুষ্টিয়ে দুটু লাইক সংগ্রহ করবেন। তাই সে কথা বলব না। বৃহত্তর খেনাডা শীতের দেশই ধরে নেই আর সেই বিষয়ে কিছু কথা বলি।]


বৃহত্তর খেনাডায় বেশ কয়েকটা প্রভিন্স আছে, এক এক প্রভিন্সে এক এক রকম জলবায়ু, তবে কিছুটা মিল তো আছেই। প্রথমেই জানা যাক, বৃহত্তর খেনাডায় ঋতু কয়টা। একটা সময় ছিল বাংলাদেশ ছিল ষড়ঋতুর দেশ, এখন বাংলাদেশ কেবলই গরমের দেশ। শীতকাল হচ্ছে কম গরমকাল, বর্ষাকাল হচ্ছে বৃষ্টিস্নাত গরমকাল ইত্যাদি। একইভাবে বৃহত্তর খেনাডায় কাগজে কলমে ঋতু আছে চারটা, তবে কার্যত একটাই ঋতু, সেটার নাম উইন্টার, অর্থ্যাৎ শীতকাল। সামার হচ্ছে এখানে উষ্ণ শীতকাল, ফল হচ্ছে এখানে প্রি-শীতকাল, স্প্রিং হচ্ছে এখানে বাংলাদেশি তাপমাত্রার শীতকাল। যদিও খেনাডাতে ঋতুর পরিবর্তনটা খুব চমৎকার চোখে পড়ে, যেমন হেমন্তে সব গাছের পাতা শুকাতে শুকাতে ঝরে পড়ে, বসন্তে নতুন করে পাতা গজায়, শীতে তুষারে ছেয়ে থাকে সব, গ্রীষ্মে সবুজে সবুজে ভরে থাকে চারপাশ, তবু আমি সবুগলোকেই শীতকাল বললাম এটার তাপমাত্রার উপর ভিত্তি করে।


হেমন্ত বা ফলে কানাডাতে অঞ্চলভেদে শূন্য থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত টেম্পারেচার দেখা যায়, বসন্তেও মোটামুটি অঞ্চলভেদে ৮-২০ এর মাঝামাঝি তাপমাত্রা থাকে। সামারে সত্যিই বেশ গরম পড়ে, তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ৪০ ডিগ্রিও ছাড়িয়ে যায় তাপপ্রবাহ হলে, তবে অঞ্চলভেদে মোটামুটি ২০-৩৮ এর মাঝে তাপমাত্রা সীমাবদ্ধ থাকে। শীতকালে এই তাপমাত্রা মোটামুটি সব অঞ্চলেই শূণ্যের নিচে নেমে যায় এবং গড়ে সেটা -৫ থেকে -৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয় অঞ্চলভেদে।


কেতাবী কথা বাদ দিলে বাস্তব কথা হচ্ছে এই যে, অক্টোবর থেকে নিয়ে এপ্রিল পর্যন্ত মোটামুটি যে কোন সময় শূণ্যের নিচে তাপমাত্রা নেমে যেতে পারে। এটা হুট করেও হয়। যেমন, সকালে হয়তো ১২ ডিগ্রি টেম্পারেচার, সন্ধ্যায় অফিস থেকে বের হলে সেটা -১২ ডিগ্রি হয়ে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। আর মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাপমাত্রা সাধারণত শূণ্যের নিচে নামে না, তবে রাতে অনেক স্থানে ৫/৬ ডিগ্রিও হয়ে যায় বিভিন্ন সময়ে। এখানকার অধিবাসীরা শীত হোক আর গ্রীষ্ম হোক, সবসময়ই ব্যাগে একটা জ্যাকেট রাখেন, যেন হুট করে ঠান্ডা পড়ে গেলে সেটা কাজে দেয়। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেটা থাকে অপেক্ষাকৃত পাতলা জ্যাকেট (সামার জ্যাকেট), আর অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত সেটা থাকে একটু ভারী জ্যাকেট (উইন্টার জ্যাকেট)।


এখন প্রশ্ন আসে যে, এই দীর্ঘ ছয় মাস শূণ্যের নিচে তাপমাত্রা থাকলে মানুষ এই তীব্র ঠান্ডায় বসবাস করে কীভাবে? এই প্রশ্নটা আমারও ছিল একসময়, পরে যখন বৃহত্তর খেনেইডিয়ান উইন্টার এক্সপেরিয়েন্স করলাম, তখন বুঝলাম যে এই দেশে তীব্র ঠান্ডা কোন বিষয় না। আমি যখন মাস্টার্সে মাত্র ভর্তি হয়েছি এখানে, ফার্স্ট উইন্টারে তীব্র ঠান্ডা পড়ল। তাপমাত্রা একদিন -৪০ ছাড়িয়ে গেল, সঙ্গে তীব্র কনকনে বাতাস, যেটাকে এখানে বলে উইন্ড চিল। অবস্থা এতই খারাপ যে বাস চলাচল পর্যন্ত সীমিত করা হল শহরে। আমি ধরে নিলাম ইউনিভার্সিটি এই আবহাওয়ায় বন্ধ হয়ে যাবে। পরে দেখলাম কিছুই হল না, ঠিকমত ক্লাস পরীক্ষা সব চলতে থাকল। খোঁজ নিয়ে জানলাম যে খেনাডায় অনলি সামারের চারমাস স্কুল বন্ধ থাকে, বাকি আটমাস ঠান্ডার মাঝেও ক্লাস-পরীক্ষা সব চালু থাকে। প্রথমে অবাক লাগলেও পরে বুঝতে পারলাম যে, অনলি চার মাস গরম থাকার কারণে খেনেইডিয়ানরা সেই চার মাসের একটা মূহুর্তও নষ্ট করতে চান না, কষ্ট করে শীতে পড়াশোনা কাজকর্ম করে গ্রীষ্মটা এরা যতটা সম্ভব আনন্দে কাটান। সকল টুরিস্ট স্পটে (যেমন নায়াগ্রা) সকল হোটেল মোটেলগুলো সামার আসার অনেক আগে থেকেই চড়া মূল্যে বুকড হয়ে থাকে। তাঁরা এই চার মাসে পুরো বছরের ব্যবসা করে নেন।


বৃহত্তর খেনাডার শীত বাংলাদেশের মতো না। আমাদের দেশে সাধারণত বাসা বাড়ি অফিস আদালত দোকান পাট তাপ ধরে রাখতে পারে এমন ভাবে তৈরী করা হয় না। অর্থ্যাৎ, বাইরে যদি শীতকালে তাপমাত্রা থাকে ৯ ডিগ্রি, তাহলে ঘরের ভেতরেও তাপমাত্র নয় ডিগ্রি। তখন আমরা লেপের নিচে কাঁপতে কাঁপতে ঢুকে বসে থাকি শরীর গরম করার জন্যে। কিন্তু বৃহত্তর খেনাডার বাসা বাড়ি, অফিস আদালত, দোকান পাট সবগুলো ভবনই এমনভাবে তৈরী করা হয় যেন ভেতরের তাপটা বিল্ডিংয়ের দেয়ালটা ধরে রাখতে পারে। প্রায় সব বিল্ডিংয়ের দেয়ালই একাধিক স্তর বিশিষ্ট হয়, অনেকটা ফ্লাক্সের মত টেকনিক আর কি। এর সঙ্গে সব ভবনেই থাকে হিটিং এর ব্যবস্থা, যেই হিটটা ঘরের ভেতরে দেয়া হয়, বিশেষ ব্যবস্থায় তৈরী দেয়ালের কারণে সেই তাপটা দেয়াল ঘরের ভেতরেই আটকে রাখতে পারে, ফলে বাইরে যখন -৪০ তাপমাত্রা, তখন আপনি ঘরের ভেতরে দিব্যি স্যান্ডো গেঞ্জি পরে ২২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ঘুরে বেড়াতে পারবেন। অর্থ্যাৎ, দেশে যেই শীতটা সারাক্ষণ তাড়া করে বেড়ায়, বৃহত্তর খেনাডায় সেই শীতটা অনলি ঘরের বাইরে, ভেতরে স্বাভাবিক তাপমাত্রাই থাকে, ফলে শীতটা সারাক্ষণ অনুভূত হয়ে শরীরে কাঁপন ধরায় না দেশের মত। আর বাইরে যাওয়ার সময় সবাই বেশ কয়েক স্তরে জামা কাপড় পরে উপরে জ্যাকেট, হ্যান্ড গ্লাভস, টুপি, মাফলার এইষব পরে তারপর বের হয়। পাবলিক বাস, ট্রেইন, প্রাইভেট কার থেকে নিয়ে সকল যানবাহনেই হিটার আছে, যানবাহনের ভেতর আবার নরমাল টেম্পারেচার। যেখানে যাচ্ছেন, সেটা দোকান হোক, ইউনিভার্সিটি হোক আর সংসদ ভবন হোক, সেখানেও হিটিং আছে, কাজেই সর্বক্ষণ শীত অনুভূত হওয়ার কোন বিষয় এখানে নেই।


কাজেই শীতের জন্য যদি কোন সাজেশন আসলে প্রয়োজন থাকে, সেটা কেবলমাত্র বাইরে যেই সময়টুকু থাকবেন সেটার জন্য প্রয়োজন। এই সময়ে বেশ কিছু জিনিস মনে রাখা প্রয়োজন।


১। ফ্রস্ট বাইট। ভয়াবহ জিনিস। তীব্র ঠান্ডায় আপনার শরীরের কোন একটা অংশে আঘাত লাগলে সেটা আপনি ঠান্ডার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে বুঝবেন না, পরে দেখতে পাবেন যে সে জায়গাটাতে প্রথমে নীল হয়ে গিয়ে পরে আস্তে আস্তে পঁচন ধরেছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত লিখতে গেলে অনেক কথা, নিজে কিছুটা পড়তে পারেন গুগল করে। ফ্রস্ট বাইট থেকে বেঁচে থাকার জন্য -১০ এর নিচে তাপমাত্রা থাকলে আঘাত লাগতে পারে এমন সব কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকুন। যেমন, বাস ধরতে দৌড় দেয়া। পিছলে পড়ে গেলে কিন্তু ফ্রস্ট বাইট হতে পারে। তারপর, দীর্ঘসময় গোড়ালি, হাতের কব্জি এইসব স্থান অনাবৃত রাখা। চেষ্টা করুন পুরো শরীর ঢেকে রাখতে, অন্তত দুই থেকে তিন স্তরের কাপড় দিয়ে। তবে -১০ এর উপরে তাপমাত্রা থাকলে ফ্রস্ট বাইট হওয়ার চান্স খুবই কম।


২। ড্রেসিং। সম্ভবত উইন্টারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ঠিকমত জামা কাপড় পরলে আপনার আর কোন সমস্যা নেই খেনেইডিয়ান উইন্টারে। অন্তত দুই থেকে তিন স্তরের জামা কাপড় পরিধান করুন। প্রথম স্তরটা আঁটোসাঁটো হওয়া জরুরী, সেটা ব্লাড সার্কুলেশনের কারণে বডিতে সৃষ্ট তাপটা ধরে রাখবে। পরের স্তরগুলো বাইরে থেকে ঠান্ডা ঢুকতে দিবে না। ভাল দেখে জুতো ব্যবহার করুন। গামবুট কেনার প্রয়োজন নেই নিতান্ত মাঠে ঘাটে কাজ না করলে। তবে এমন জুতো ব্যবহার করুন যেটার গ্রিপ ভাল (বরফে যেন পিছলে না পড়ে) এবং যেটার ভেতরে তুষার না ঢুকে যায়। প্রায়ই হাঁটু সমান উঁচু তুষার পড়ে, কাজেই জুতোটা শুকনো রাখাটা জরুরী।


৩। ব্ল্যাক আইস। এটা বেশ বিপজ্জনক, এবং হাঁটার সময়ে এই বিষয়ে লক্ষ্য রাখাটা জরুরী। যখন বরফ থাকে, তখন যদি কোন কারণে দিনের বেলায় সূর্যের জন্য বা অন্য কোন কারণে তাপমাত্রা শূণ্যের উপরে উঠে, তখন সেই বরফগুলো গলে বানি হয়ে যায়। তারপর যখন সন্ধ্যায় সূর্য ডুবে গিয়ে তাপমাত্রা আবার শূণ্যের নিচে নেমে যায়, তখন সেই গলে যাওয়া পানিগুলো জমে বরফ হয়ে যায়। সেটার উপর দিয়ে হাঁটতে গেলে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর। আমরা বাংলায় দুটাকেই বরফ বলি, কিন্তু মূলত একটা হচ্ছে তুষার বা স্নো আর একটা হচ্ছে বরফ বা আইস। স্নো এর উপর হাঁটা মোটেও বিপদজনক না, বরং বেশ মজা, কিন্তু আইসের উপর দিয়ে হাঁটা খুবই রিস্কি এবং মনোযোগের বিষয়।


৪। দীর্ঘসময় বাইরে থাকা। বিনা কারণে দীর্ঘসময় উইন্টারে বাইরে থাকা অনুচিত। একটা শোনা গল্প এরকম যে, -৪০ টেম্পারেচারে এক লোক হাঁটতে বের হয়েছে। প্রায় তিরিশ মিনিট হেঁটে এসে সে দেখে যে তাঁর চোখ মুখ সব জমে গেছে। সে হাত দিয়ে মুখের আশেপাশে ঘষে ঘষে গরম করার চেষ্টা যখন করছিল তখন তার কানের লতি দুটা মট করে ভেঙে গেল! সেগুলো একদম জমে বরফ হয়ে গিয়েছিল, নাড়া দিতেই ভেঙে গেছে! মনে রাখবেন যে, খেনাডায় বাথরুমে বা রান্নাঘরের পানির কলে গরম ও ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা থাকে সবসময়, বাইরে থেকে এসে শরীরের কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ রেসপন্স না করলে ভুলেও সেটা ডলাডলি করে গরম করার চেষ্টা করবেন না। প্রয়োজনে ইষৎ উষ্ণ পানিতে সেই অসাড় অঙ্গটি (যেমন হাতের আঙুল) কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন, নরমাল হয়ে যাবে।


৫। বারান্দাকে ফ্রিজ হিসেবে ব্যবহার করা। আমরা অনেক সময় মাছ মাংস বারান্দায় রেখে দিতাম। -২০/-২৫ তাপমাত্রায় সেটা ফ্রিজের চেয়ে ভাল কাজ করে। বারবার বাজারে না গিয়ে একদিনে অনেক বাজার করে আনতে পারেন। ফ্রিজে জায়গা না হলে বারান্দায় রেখে দিতে পারেন কিছু মাছ মাংস। তবে কিছুটা হেলথ ইস্যু থাকে এই ক্ষেত্রে। আমি তো খাঁটি ফরমালিনখোর বাঙালি, এইসব হেলথ ইস্যু আমি কেয়ার করিনি।


৬। ফ্লু শট। বিনামূল্যে পাওয়া যায়, নিয়ে রাখা ভাল শীত শুরু হওয়ার ঠিক আগে আগে। নয়তো এই দেশে ঠান্ডা লেগে গেলে বিপদ। একে তো দেখার কেউ থাকবে না, দ্বিতীয়ত নিজের সকল কাজ নিজেকেই করতে হবে, অসুস্থ হয়ে গেলে মহা সমস্যা।


৭। ডায়েট। বেশিরভাগ বাংলাদেশি ছাত্রই খেনাডায় এসে মুটিয়ে যান, আমি নিজেও এর ব্যতিক্রম নই। ৬০ কেজি থেকে ৯৪ হয়ে এখন আবার ৭৫ এ নেমেছি। প্রথম কারণ, এখানকার খাবারের ফুড ভ্যালু, দ্বিতীয় কারণ দীর্ঘ ছয় মাস উইন্টার থাকার কারণে কোন একটিভিটিজ না থাকা। চেষ্টা করুন ঘরে অন্তত কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে বা খাবারটা কমিয়ে খেতে।


৮। অতি অবশ্যই নিয়মিত গোসল করুন, নিয়মিত গায়ে তেল-লোশন মাখুন। নয়তো চামড়া ফেটে যাবে ভয়াবহ শুষ্ক ওয়েদারে। যেহেতু ঘরে হিটার চলে সারাক্ষণ, ঘরেও ওয়েদার ড্রাই হয়ে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে দেখা বা কফের সঙ্গে রক্ত দেখা খুব স্বাভাবিক। ঘাবড়াবেন না, ঘরে একটা হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন, সমস্যা কেটে যাবে। বিশেষত ছোট বাচ্চা থাকলে অবশ্যই হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন।


৯। শেষ বাস কয়টায় সেটা একাধিকবার চেক করুন রাস্তায় বের হলে। সম্ভব হলে শেষের আগেরটাতে ঘরে ফিরে যান। সেটাও সম্ভব না হলে শেষ বাসে। আমি একবার তীব্র শীতের রাতে শেষ বাসটা মিস করেছিলাম। পরে ৯১১ এ ফোন করে আমার অবস্থান জানানোর পাঁচ মিনিট পর এক পুলিশ অফিসার আমাকে তাঁর গাড়িতে করে বাসায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। তবে সেটা হচ্ছে একদম শেষ অপশন। ৯১১ একটা ইমার্জেন্সি নাম্বার, ইমার্জেন্সি সেবা। সেটার মিসইউজ যেন কোনভাবেই না হয় সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে যে কোন ক্ষেত্রে। ইউনিভার্সিটিগুলোর কিছু শাটল সার্ভিস থাকে উইন্টারে, সারা রাত। ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে খোঁজ নিয়ে সেগুলোর সেবা নিতে পারেন বাস মিস করলে। ভুলেও তীব্র শীতের মাঝে লং ডিসটেন্স হাঁটবেন না।


১০। বেশি খরচ করে খুব ভারী লেপ কাঁথা কেনার দরকার নেই। আগেই বলেছি যে, ঘরের ভেতর নরমাল টেম্পারেচার থাকে। কাজেই ভারী কম্বল কিনলে কোন আরাম হবে না। পাতলা কাঁথাই ভাল। এখানে কমফোর্টার নামে সস্তায় এক বস্তু পাওয়া যায়, সেটাই বেস্ট।


১১। রিয়েল ও ফিলস লাইক টেম্পারেচার। প্রায়ই দেখা যাবে যে, রিয়েল টেম্পারেচার হচ্ছে -১০ কিন্তু ফিলস লাইক টেম্পারেচার হচ্ছে -১৪। এর মানে হচ্ছে আসলে তাপমাত্রা -১৪ এর মত অনুভূত হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে -১৪ এর জন্যই প্রিপারেশন নিতে হবে। বেশিরভাগ সময়ই বাতাসটা সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায় উইন্টারে। হয়তো বাতাস (উইন্ড চিল) না থাকলে আপনি -১৫ পর্যন্ত খুব একটা ফিলই করবেন না যে ঠান্ডা আছে তেমন, আবার উইন্ড চিল থাকলে -৫ টেম্পারেচারেও অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। কাজেই টেম্পারেচার চেক করার সময় ফিলস লাইক কত, উইন্ড কতটুকু আছে, এই বিষয়গুলোও দেখুন। আর ভুলেও টেম্পারেচার চেক না করে উইন্টারে ঘর থেকে বের হবেন না।


১২। ...আপাতত আর মনে পড়ছে না। পাঠকদের কেউ কিছু যোগ করতে চাইলে নির্দ্বিধায় করে দিন। এখন ভোর চারটা চল্লিশ বাজে, ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসছে। মনে না পড়ার সেটাও একটা কারণ হতে পারে।


সকলের প্রথম উইন্টার নিরাপদ ও আনন্দময় হোক খেনাডাতে। আপাতত শুভরাত্রি (শুভসকালও বলা যায়)।


Winter in Canada: Great Read!