Frequently Asked Questions (FAQs):

This document will be updated by PBSCU on a regular basis. You can also search in the group using the post topic #EverydayFAQ


©PBSCU Any unauthorized use of this article, including copying or editing is prohibited. If you want to use the article, you need to take permission from us: pbscuadm@gmail.com or from the author and you must mention the author's name and the group's name in all cases.


This portion has been written by Alimuzzaman E'mon (University of Manitoba).


আপনাকে যদি কোনো ইন্ডিয়ান/জাপানিজ/স্প্যানিস/আমেরিকান প্রশ্ন করে "বাংলাদেশে পড়ালেখা +থাকা খাওয়া করতে কেমন খরচ ভাই?"

আপনি কি উত্তর দিবেন, স্বভাবতই ভাবনা শুরু করবেন যে কি বলা যায়। কারণ ঢাকা ইউনিভার্সিটি পড়তে একরকম, ব্র‍্যাক/NSU পড়তে একরকম, ঢাকার বাইরে সরকারি পড়তে একরকম। এদেশেই কোথাও পড়ালেখা +থাকা খাওয়া খরচ হয় ৩ লাখ /বছর। আবার কোথাও ৫০হাজার/বছর।


তাহলে চার বছরে দাঁড়ায় কোথাও ১২ লাখ, আবার কোথাও ২ লাখ। কেউ হয়ত ফ্যামিলির টাকা দিয়ে পড়ে, কেউ হয়ত টিউশনি করিয়ে পড়ালেখা +থাকা খাওয়া চালায়। ✌


ঠিক এমনিভাবে আপনি যদি প্রশ্ন করেন, ক্যানাডায় চার বছরে কত লাগে ভাই থাকাখাওয়া+পড়ালেখা। তখন উত্তরে কি বলা যায়? নিজের টাকা দিয়ে কি পারবো পড়ালেখা শেষ করতে। সত্যি বলতে, কোনো উত্তর থাকেনা এমন প্রশ্নের। তাই আ্যডমিন এবং আমজনতারা এড়িয়ে যায়। কারণ যখন বলা হবে বছরে ৮ লাখ। তখন প্রশ্ন আসবে কোন ভার্সিটি ভাই। উত্তরে কয়েকটা ইউনিভার্সিটির নাম বললে প্রশ্ন আসবে কোনটা ভালো হবে, এটার উত্তর ক্লিয়ার করলে প্রশ্ন আসবে কোন সাবজেক্টে পড়বো, এই সাবজেক্টে কত টাকা খরচ!!!  😭


এজন্য সিম্পলি এড়িয়ে যাওয়া হয় প্রশ্নগুলো। এর থেকে আপনি যদি প্রশ্ন করতেন ভাই অমুক ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে দেখলাম "aaa" টাকা টিউশন ফি। আর এই ইউনিভার্সিটির সাইটে দেখলান "bbb" টিউশন ফি। আমার স্কলারশিপ আছে/নেই আমি এই সাবজেক্টে আন্ডারগ্রাড/গ্রাড করতে চাই। কোনটা ভালো হবে। অনেকেই দেখবেন সাহায্য করবে। অথবা কিছু স্পেসিফিক প্রশ্ন করতে পারেন " ইউনিভার্সিটি অফ আ্যলবার্টাতে এই সাবজেক্ট পড়তে চাই। খরচ (যদিও ওয়েবসাইটে দেওয়া থাকে) এবং চাকরির ক্ষেত্র কেমন / কতটা ভ্যালু আছে এই ডিগ্রীর সেখানে"


আবার অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন " ভাই ক্যানাডা আ্যপ্লাই করতে চাই, ফুল প্রসেসটা যদি ডিটেইলসে বলতেন!! " এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুবই ভয়ানক 😆 😭 লাস্ট পোষ্টের পরে ইনবক্সে ৬০++ মানুষকে কমবেশী সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রায় অনেকেরই প্রশ্ন, ভাই কোন এজেন্সী ভালো? 😂 এজন্য ভবিষ্যৎ এ নতুন করে কেউ ইনবক্স করবেন না আশা করি। গ্রুপে পোষ্ট দিন। সবার উপকার হবে। একই কথা ১০ জনকে বলতে গেলে ১০ বার বুঝিয়ে বলতে হয়। গ্রুপে বললে সবাই পাবে।


অনেক সিনিওর ভাইয়া phd/masters সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। আমি সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। সত্যি বলতে আন্ডারগ্রাড আর ভিসা প্রসেসিং (শুধুমাত্র স্টুডেন্ট) সম্পর্কে অল্প কিছু ধারণা আছে বলতে পারেন। মাস্টার্সের /পিএইচডি সিস্টেমটা একটু আলাদা। তাই ওই বিষয় জ্ঞান লাভ করতে এখনো ২/৩ বছর লাগবে আমার।😊


এখন আসুন, সেই প্রশ্নের উত্তর...

*না ভাই, আপনি পার্ট টাইম করে থাকাখাওয়া চালাতে পারলেও পড়ালেখার খরচ চালাতে পারবেন না আন্ডারগ্রাড এ। এজন্য আপনাকে চার বছরের জন্য বাসা থেকে সাহায্য নিতে হবে। স্কলারশিপ পেয়ে গেলে অন্য কথা। তাও খুবই কম। মাস্টার্স/পিএইচডি তে অনেক বেশী স্কলারশিপ থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রে বাসা থেকে টাকা না নিলেও চলে।😊


*হ্যা ভাই, IELTS ছাড়া আ্যপ্লাই করা যাবে, অফার লেটারও হয়তো পাবেন। কিন্তু ভিসা পেতে কষ্ট হবে।যদিও তা কন্ডিশনাল অফার লেটার। আপনাকে ফাউন্ডেশন প্রোগ্রাম শেষ করতে হবে, ভালো রেসাল্ট করতে হবে। তারপরে তারা আপনাকে প্রোমোশন দিলে মেইন ইউনিভার্সিটি শুরু হবে। তার উপরে ফাউন্ডেশন প্রোগ্রামের সময় অফ ক্যাম্পাস ওয়ার্ক পারমিটও পাবেন না। তার উপরে IELTS ছাড়া ভিসা রিজেকশনের সম্ভাবনাও বেশী।😊 বিদেশে গিয়ে লাখ টাকা খরচ করে ফাউন্ডেশন করার থেকে ভালোমত প্রিপারেশন নিয়ে IELTS নেওয়া ভালো নয় কি? যে টাকা দিয়ে ফাউন্ডেশন কোর্স করবেন সেই টাকা দিয়ে আপনি ielts কতবার দিতে পারবেন তার হিসেব নেই। তাও ফাউন্ডেশন এই যাবো ভাই। গার্ল্ফ্রেন্ড এর মা পেরা দেয়, সেইম এইজ প্রেম। আমার গ্যাপ পড়ে যাবে ভাই, আমি দেশ ছাড়তে চাই ভাই।😂 ধৈর্য ধরুন ভাই।


*হ্যা ভাই, আপনি দুই এক বছর গ্যাপ দিয়েও যেতে পারবেন। ভ্যালিড রিসন দেখান এবং তার প্রুফ হিসেবে কিছু কাগজপত্র দেখান। আপনি চাকরি করেছেন ২ বছর তাই দেখান। আপনার বাবা মারা গিয়েছে, পড়ালেখা বন্ধ করেছিলেন এজন্য তাই দেখান।ভালো ইউনিভার্সিটিতে মনের সাবজেক্ট পাননি তাই দেখান। IELTS কোর্স করেছেন, তাই দেখান। 😊


*না ভাই, আপনি ব্যাংক ব্যালেন্স শো না করে শুধু জমি দেখিয়ে আন্ডারগ্রাড করতে যেতে পারবেন না। আপনাকে মিনিমাম একটা আ্যমাউন্ট দেখাতে হবে আপনার ব্যংকে, এবং তা মিনিমাম ৩ মাস রাখার ট্রাই করুন। যদিও গ্রুপের অন্য আ্যডমিন আপু/ভাইয়া বলবে ৬ মাস। আমি ৩ মাস বললাম কারণ সবার পরিস্থিতি এক হয়না। যেমনটা আমার ছিলোনা। কারো টাকা থাকে কিন্তু সেইভ থাকেনা। কারো অনেক টাকা কিন্তু রিসেন্টলি ফ্ল্যাট/বাড়ি/গাড়ি কিনে ফেলেছেন। তাই আবার টাকা জমাতে হবে। এজন্য মিনিমাম ৩ মাসের দেখান। হুট করে টাকা জমা রাখবেন না। এতে ভিসা অফিসারের সন্দেহ হয়।আপনি লোন/ধার নিয়েছেন এটা ভাবতে পারে। ধার নেওয়া দোষের কিছুনা, কিন্তু নিলেও তা ৩/৪ মাস আগে নিন, এবং এই টাকার ইনকামের কোনো সোর্স দেখান। বাড়ি ভাড়া থাকলে সেটা, বেতন, পেনশন থাকলে সেটা, জমি বিক্রি করলে সেটা।


*ধীরে সুস্থে কাজ করুন। অনেকে ভাবেন এই সেমিস্টার না ধরতে পারলে জীবন থেকে অনেক কিছু হারিয়ে যাবে। কিন্তু অনেক ইউনিভার্সিটিতেই দুইটা সেমিস্টার করায়। আপনি চাইলে সামারে কিছু কোর্স এগিয়ে নিয়ে গ্যাপ পূরণ করতে পারবেন। তাই অতটা তাড়াহুড়োরর কিছু নেই।


*কিছু জিনিস এগিয়ে রাখবেন আগে থেকেই। স্টাডি প্ল্যান লেখা, cv দরকার হলে সেটা তৈরী করে রাখুন(সাধারণত দুই বছরের বেশী গ্যাপ থাকলে সিভি দিতে হয়)। আ্যকাডেমিক কাগজপত্র সব উঠিয়ে হাতের কাছে রাখুন। দরকার পড়লে নোটারি করে ফেলুন। ট্যাক্স ফাইল উঠিয়ে ফেলুন। ট্যাক্স না দেওয়া থাকলে এখন (দরকার হয় জরিমান সহ দিন) ক্লিয়ার করুন। জমিজমার কাগজ তুলে হাতের কাছে রাখুন। ব্যংক স্টেটমেন্ট শেষ মুহূর্তে নিবেন আ্যপ্লাই করার আগে।


​আর একদম আ্যপ্লাই এর দুই এক সপ্তাহ আগে ব্যাংক স্টেটমেন্ট, স্পন্সরশীপ ডিক্লেয়ারেশন, CA ভ্যালুয়েশন এই কাজগুলো করুন।😊

ধাপে ধাপে এগিয়ে যান। একবারে আপনাকে সব বুঝিয়ে বললেও ভুলে যাবেন। একটু একটু করে আগান।😊

passport > ielts > university apply > collecting documents > visa application.


ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।



This portion has been written by Mahmud Hasan, M.Sc., Writer & Poet (Western University).


কয়েকটি বিষয়ে প্রসপেক্টিভ স্টুডেন্টদের কমন প্রশ্ন ও তার উত্তর:


প্রশ্নঃ কানাডায় পার্ট টাইম কাজ কি এভেইলেবল? অমুকের কাছে শুনেছি যে এভেইলেবল।


কানাডা একটি বিশাল দেশ, যার জনসংখ্যা তিন কোটি পঁয়ষট্টি লক্ষের মতো। ঢাকার জনসংখ্যাও সম্ভবত এর চেয়ে বেশি। এই বিশাল দেশের সব জায়গাতেই কিন্তু জনবসতি নেই। দেশটি বেশ কিছু প্রদেশে বিভক্ত। অন্টারিও হচ্ছে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার প্রদেশ, অন্টারিও প্রদেশেও আবার টরন্টো হচ্ছে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার শহর। টরন্টোতে আনুমানিক ৫০ লক্ষ মানুষ থাকে। টরন্টোর আশেপাশের শহরগুলো মিলিয়েই হয়তো এক কোটির কাছাকাছি জনসংখ্যা হবে। আবার অন্টারিওতে এমনও শহর আছে যার জনসংখ্যা মাত্র পনেরশ! একটা প্রদেশের শহরগুলোর ভেতরেই জনসংখ্যার এত পার্থক্য, বুঝতেই পারছেন প্রদেশগুলোতে জনসংখ্যার কেমন পার্থক্য হতে পারে। সকল শহরের জনসংখ্যা জানতে হলে গুগল করে দেখতে পারেন। সে যাই হোক, আমাকে একটা প্রশ্নের উত্তর দিন আপাতত। ধরি, ঢাকার জনসংখ্যা তিন কোটির বেশি, আর হয়তো সৈয়দপুরের জনসংখ্যা বিশ-ত্রিশ লাখের মতো। তাহলে চাকরির সুযোগ কোথায় বেশি থাকাটা স্বাভাবিক? যেখানে মানুষ বেশি, সেখানে স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানও বেশি, কাজেই চাকরির সুযোগও বেশি। বুঝতে পারছেন? কাজেই কেউ যদি বলে 'কানাডায়' চাকরির সুযোগ এভেইলেবল সেটা খুবই ভুল কথা। কোন প্রদেশের কোন শহরে আপনি যাচ্ছেন সেটা অবশ্যই পার্ট টাইম কাজের এভেইলেবেলিটির জন্য একটা বড় ফ্যাক্টর। আর এখানে একেকটা শহর এত দূরে দূরে যে আপনি একটা শহর থেকে আরেকটা শহরে গিয়ে পার্ট টাইম চাকরি করে আবার নিজের শহরে ফেরত আসবেন সেটা সম্ভব নয়। আর যাতায়াতের খরচ তো বাদই দিলাম।


প্রশ্নঃ পার্ট টাইম কাজ করে কি টিউশন ফি ও অন্যান্য খরচ চালানো যাবে? শুনেছি মালয়েশিয়াতে সেটা করা যায়? 


টিউশন ফি একটা বিশাল অঙ্ক, এমবিএ-মেডিক্যাল ধরণের কিছু প্রফেশনাল ডিগ্রি বাদ দিলে হয়তো বলা যেতে পারে গড়ে ২০ হাজার ডলার বছরে টিউশন ফি। তবে একেক প্রভিন্সে একেক রকম টিউশন ফি, একই প্রভিন্সের একেক ইউনিভার্সটিতেও একেক রকম টিউশন ফি, এমনকি একই ইউনিভার্সটির একেক ডিপার্টমেন্টের একেক প্রোগ্রামেও টিউশন ফি একই না। ধরা যাক ইউনিভার্সটি অফ টরন্টোতে আপনি কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স করছেন। এখন কোর্স বেইসড মাস্টার্স আর থিসিস বেইসড মাস্টার্সে কিন্তু একই টিউশন ফি নয়! আবার প্রতি বছরই টিউশন ফি কম বেশি উঠা-নামা করে (আসলে কেবল উঠেই, কখনও নামে না)। কাজেই, বুঝতেই পারছেন, এই বিষয়টা কতটা ভ্যারিয়েবল। একইভাবে, কোন শহরে থাকছেন সেটার উপর ভিত্তি করে বাসা ভাড়া ও অন্যান্য খরচও ভ্যারিয়েবল। অতএব, এই প্রশ্নের জেনারালাইজড কোন উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। যেই শহরে যেই ইউনিভার্সটিতে যেই প্রোগ্রামে ভর্তি হচ্ছেন সেটার উপত ভিত্তি করে আপনার পার্ট টাইম কাজের সুযোগ ও সেটার রোজগার ও আপনার খরচ হিসাব করতে হবে। তবে, ইন জেনারেল বলা যায় যে বছরে অন্তত ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ হাজার ডলার আপনার লাগবে নিজের খরচে পড়তে আসলে (প্রফেশনাল ডিগ্রি ব্যাতীত)। কানাডায় অড জব করে সর্বোচ্চ মাসিক আয় করা যায় হাজার দুয়েক টাকা (ট্যাক্স কাটার পর), যদি আপনি সারা দিন কাজ করেন পড়াশোনা না করে, অর্থ্যাৎ বছরে ২৪ হাজার টাকা। কাজেই বুঝতেই পারছেন পার্ট টাইম কাজ করলে হাজার পনেরশ এর বেশি পাবেন না মাসে, আর সেক্ষেত্রে আপনাকে একটা বিশাল পরিমাণের টাকা সবসময়ই দেশ থেকে আনতে হবে। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এইসবের সাথে কানাডাকে তুলনা করে লাভ নেই। আপনার কাছে দু'টাই 'বিদেশ' হতে পারে, তবে দু'টা সম্পূর্ণ ভিন্ন দেশ, ভিন্ন ব্যবস্থা, ভিন্ন পরিবেশ।প্রশ্নঃ অমুক ওয়েবসাইটে পেয়েছি কানাডার তমুক ইউনিভার্সটিতে টিউশন ফি ছয় হাজার ডলার। এক কথায় বলুন এটা ঠিক না ভুল?আগের প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়েছে যে এটা ভ্যারিয়েবল। তবে এটা যদি প্রতি সেমিস্টারের টিউশন ফি হয়, তাহলে কাছাকাছি। পুরো বছরের হলে ঠিক হওয়ার কোন কারণ দেখি না।


প্রশ্নঃ খরচ কম এমন ইউনিভার্সিটি বা কলেজ থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি করলে কানাডায় টিচার হওয়া যাবে কি না?


আমার ইচ্ছা কানাডায় টিচার হওয়া।সাধারণত অল্প খরচের ইউনিভার্সিটি হয় না। যেই কলেজগুলো অল্প খরচে ডিগ্রি দেয়, সেগুলো আসলে 'ভগিচগি কলেজ'। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলো কোর্স বেইজড প্রোগ্রাম বা নাম কা ওয়াস্তে থিসিস বেইজড প্রোগ্রাম। এগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যতটা তার চেয়ে হাজারগুণ বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রথম কথা হচ্ছে থিসিস বেইজড মাস্টার্স ও পিএইচডি না করলে আপনি টিচিং প্রফেশনের জন্য যোগ্যই হবেন না। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, কোর্স বেইজড মাস্টার্স করা গেলেও কোর্স বেইজড পিএইচডি করার সুযোগ নেই, কাজেই এইসব কলেজ আপনাকে সেই ডিগ্রি দিতে পারবে না। আর কানাডায় পিএইচডি তো পিএইচডি, তিন চারটা পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ এক্সপেরিয়েন্স নিয়েও টিচিং পজিশন পাওয়া কঠিন এখন, ভবিষ্যতে সেটা আরও কঠিন হবে। মানুষজন ভাল ভাল ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি, ভাল ভাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে পোস্ট ডক করেও টিচিং পজিশন পাচ্ছে না, আর সেখানে এইসব ভগিচগি ডিগ্রি নিয়ে টিচিং প্রফেশনে আসার চিন্তা করার তেমন সুযোগ নেই।প্রশ্নঃ কানাডায় চাকরির সুযোগ কেমন? পাশ করে চাকরি পাওয়া যাবে কিনা? মিডল ইস্টে তো চাকরির সুযোগ ভাল।আবার বলতে হয়, মিডল ইস্টের সঙ্গে কানাডাকে মিলিয়ে লাভ নেই। কানাডায় চাকরির সুযোগ কেমন সেটা নির্ভর করছে আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড কী এবং আপনি কোথায় চাকরি খুঁজছেন সেটার উপর। ইন জেনারেল এটা বলা কঠিন। তবে নিজের পছন্দমত চাকরি বা নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে মিলে এমন চাকরি পাওয়াটা এখনও, যে কোন ব্যাকগ্রাউন্ডের জন্যেই, কানাডাতে একটা ভাগ্যেরই ব্যাপার।


প্রশ্নঃ মাস্টার্স শেষ না করেই চাকরি শুরু করা যাবে কিনা? বাংলাদেশি টাকায় কত টাকা বেতন পাওয়া যাবে প্রাথমিকভাবে?


না যাবে না, যদি না আপনি পারমানেন্ট রেসিডেন্ট হন। আপনার ওয়ার্ক পারমিট লাগবে ফুল টাইম চাকরি করতে গেলে। সেটা স্টাডি পারমিট জমা না দিলে পাবেন না। আসলে ডিগ্রি শেষ না হলে ওয়ার্ক পারমিটও দেয়ার সম্ভাবনা নাই। বাংলাদেশি টাকায় কত টাকা বেতন পাবেন সেটাও ভ্যারিয়েবল। বছরে চব্বিশ হাজার ডলার থেকে শুরু করে আশি হাজার ডলার পর্যন্ত স্টার্টিং স্যালারি হয়, চাকরির প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। এখান থেকে ট্যাক্স কাটে। একেক লেভেলের ইনকামের জন্য একেক পার্সেন্টিজে। ডলারের রেট টাকার বিপরীতে উঠা-নামা করে। কাজেই আপনি চাকরি পাওয়ার পর আপনাকে হিসাব করে নিতে হবে আপনি বাংলাদেশি টাকায় কত টাকা পাচ্ছেন। সবশেষে, কানাডায় পড়তে আসতে চাইলে সবচেয়ে বড় যেই শর্ত পূরণ করতে হবে সেটা হচ্ছে ভিসা পাওয়া। যেটা ভগিচগি কলেজে বা নিজ খরচে পড়তে আসতে চাইলে পাওয়াটা খুবই কঠিন। দিন দিন সেটা আরও কঠিন হচ্ছে।


প্রশ্নঃ কানাডা আমার কাছে স্বপ্নের দেশ। কানাডা তে আসতে চাই, স্বপ্ন পুরন করতে চাই।


আগেই ধরে নেই বিদেশে পড়তে আসাটা এই গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রী স্বপ্ন, কাজেই আমি স্বপ্ন পূরণ বলতে কেবলমাত্র এই লেখার ক্ষেত্রে শুধু বিদেশে পড়তে আসাই বুঝাব। যদিও বিদেশে পড়তে আসাই মানুষের জীবনের একমাত্র স্বপ্ন হওয়া উচিৎ নয়। এই স্বপ্ন পূরণ হওয়াটাও কোন সফলতা নয়।


মূল লেখায় আসি এবার। স্বপ্ন পূরণ যাঁরা করেন এবং স্বপ্ন পূরণ করতে যাঁরা ব্যর্থ হন এঁদের মাঝে আসলে পার্থক্যটা কোথায়? আমি দেখেছি, যখনই আমি কোন পোস্ট করি এই গ্রুপে, শত শত ছাত্র-ছাত্রী লাইক-কমেন্ট করেন। বেশিরভাগ কমেন্টই থাকে এমন - 'ভাই স্যালুট', 'ভাই রেসপেক্ট', 'ইন্সপায়ার্ড হলাম খুব', 'ভাইয়া আপনার ফ্রেন্ড হতে পারি' ধরণের। অনেকে আবার কমেন্ট না করে ইনবক্স করেন। যাঁরা কমেন্ট করেন তাঁরাও অনেকে ইনবক্স করেন। সেইসব মেসেজের মূল বক্তব্য মোটামুটি এইরকম - আমার সিচুয়েশন এই, আমি কানাডায় পড়তে আসতে চাই কিন্তু কিছুই জানি না। আমাকে সাজেস্ট করেন কী করা লাগবে।


কথাপ্রসঙ্গে বলা যেতে পারে যে, বিদেশে পড়তে আসা একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। এখানে ভর্তি ম্যানেজ করা থেকে শুরু করে টাকা পয়সা ম্যানেজ করা, বিদেশে যাওয়ার অনুমতি যোগাড় করা যেই দেশে যাচ্ছেন সেই দেশের সরকার থেকে, এবং ক্ষেত্রবিশেষে বাংলাদেশ থেকেও, কেনাকাটা করা থেকে নিয়ে বিদেশে গিয়ে কিছুটা মানিয়ে নেয়া পর্যন্ত আসলে অসংখ্য বিষয় থাকে, যার প্রতিটাই আপনাকে হাতে ধরে করিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। সে জন্যে অনেক ফাইল রাখা আছে বিষয়ভিত্তিক, যেগুলো প্রাথমিক প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে সহায়ক হতে পারে। সে যাই হোক, তবু আমি চেষ্টা করি সবাইকেই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে, কারণ, আমি কখনোই ভুলে যাই না যে কিছুদিন আগে বিদেশে পড়তে আসার ব্যাপারে আমার ধারণাও এইরকমই ছিল।


এখন দেখা যায় যে, কেউ কেউ কিছু প্রশ্ন করেন, কিছু উত্তর পেলে আস্তে আস্তে আর কোনদিন যোগাযোগ করেন না। আবার দেখা যায় কেউ কেউ লেগে থাকেন প্রশ্ন নিয়ে, কিছুদিন পর পরই নিত্য নতুন প্রশ্ন নিয়ে আসেন। আমি দীর্ঘ তিন বছরে দেখেছি যে, যাঁরা লেগে থাকেন, শেষ পর্যন্ত তাঁরাই উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন। আর যাঁরা অল্প কিছু প্রশ্নের পর হারিয়ে যান তাঁরা আসলে এই বিষয়ে পর্যাপ্ত আগ্রহী নন, একটা লেখা পড়ে তাঁরা ইন্সট্যান্টলি ইন্সপায়ার্ড হন, ইন্সট্যান্টলি সিদ্ধান্ত নেন যে তাঁকেও বিদেশে আসতেই হবে, ইন্সট্যান্টলি খোঁজ-খবর শুরু করেন এবং শেষপর্যন্ত খুব দ্রুতই হারিয়ে যান। কাজেই স্বপ্ন পূরণের মূল কথা হচ্ছে - লেগে থাকতে হবে, নয়তো স্বপ্ন সবসময় স্বপ্নই থেকে যাবে।

আরেকটা বিষয় হচ্ছে এই যে - স্বপ্নটাও তো হওয়া উচিৎ স্বপ্নের মতোই। সবাই বাইরে পড়তে যায় কাজেই আমাকেও যেতে হবে - এটা কোন স্বপ্ন হতে পারে না। নিজের পারিপার্শ্বিক অবস্থা, নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, নিজের যোগ্যতা সব বিবেচনা করেই ঠিক করতে হবে যে আপনার স্বপ্নটা কী হওয়া উচিৎ। সবার সব যোগ্যতা থাকে না। টাকা রোজগার করাটাই বিদেশে পড়তে আসার মূল কথা হতে পারে না। আমার খুব ছোটবেলার বন্ধু, সম্ভবত এখন পর্যন্ত আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধুটির পড়াশোনা ক্লাস এইট পর্যন্ত। সে দেশে হার্ডওয়ারের ব্যবসা করে, যেই ব্যবসা শুরু হয়েছিল প্লাস্টিকের থালা-বাটি-বদনা বিক্রি করা থেকে। এখন তাঁর দোকানে বিক্রি মাসিক দশ লক্ষ টাকার উপরে, লাভ কত সেটা সরাসরি বলছি না, তবে বাংলাদেশে এই ধরণের ব্যবসায় রাফলি ২৫ থেকে ৩০ পার্সেন্ট লাভ থাকে। আমার পড়াশোনা অনেক বেশি, কিন্তু আমার রোজগার কিন্তু ওর চেয়ে অনেক কম। কিন্তু আমার ভাল লাগে পড়তে তাই পড়তে এসেছিলাম, আর ও জানে ওর লিমিটেশন কোথায় তাই ও ব্যবসায় নেমেছিল। সফলতা আপেক্ষিক বিষয়, এটাকে সবসময় টাকা বা ডিগ্রি দিয়ে মাপা সম্ভব না।


কাজেই নিজের লিমিটেশন জানুন, সেটার উপর ভিত্তি করে নিজের স্বপ্ন কী সেটা ভালমতো ঠিক করুন এবং পূরণ করতে হলে সেই স্বপ্নের পিছনে লেগে থাকুন। একটা লেখা পড়ে নগদে ইন্সপায়ার্ড হয়ে নগদেই ভুলে যাওয়াটা আপনার ও আমার দুজনেরই সময় নষ্ট করা ছাড়া আর কিছু করতে পারবে না।