IELTS Target 7: Practice at Home!

This document is originally written by Didar Rahman (Sociology, University of Dhaka).


Year of Publication: 2018


©PBSCU Any unauthorized use of this article, including copying or editing is prohibited. If you want to use the article, you need to take permission from us: pbscuadm@gmail.com or from the author and you must mention the author's name and the group's name in all cases.


বাসায় প্রাকটিস করে কীভাবে আইএলসে ৭ পেলাম!


গ্রুপে সবচেয়ে যে বিষয়টি নিয়ো পোস্ট করা হয় তার মধ্যে আইএলসে ভালো স্কোর কীভাবে তোলা যায় তা একটি। গ্রুপটির সম্মানিত এডমিন ও অন্যান্যরা বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই পরামর্শ দেন, কথা বলেন। এখানে আমি আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। এটি যদি কারো কোন উপকারে লাগে সেটিই আমার প্রাপ্তি। আমার স্কোর ছিল রিডিংয়ে ৬.৫, রাইটিংয়ে ৬.৫, লিসিনিংয়ে ৭.৫ আর স্পিকিংয়ে ৭।


আইএলসে ভালো করতে না পারার পেছনে আমি সবার আগে আমাদের ইংরেজি ভীতিকে দায় দিতে চাই। ছোটবেলা থেকে গ্রামার. টেনস আর কমিউনিকেটিভ ইংলিশ নিয়ে আমরা ঠিকই পড়ি কিন্তু ইংরেজির ভয়কে দূর করতে পারি না। মূলতঃ কানাডা পড়তে যাবার নিয়ত করেই আইএলস পরীক্ষায় আমি বসি। এর অনেক আগে থেকেই পরীক্ষাটি দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বসি বসি করে আর বসা হয় না। তাই সবার আগে নিয়তটা করে ফেলা জরুরি। কারণ ইন্নামাল আমালু বিন নিয়্যাতি, নিশ্চয় সব কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল। তাই পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন সবার আগে। আমি জানুয়ারিতে রেজিস্ট্রেশন করে এপ্রিলের ডেট নেই। অনেকে আইডিপি কিংবা ব্রিটিশ কাউন্সিল নিয়ে ভাবেন কোথায় পরীক্ষা দেবেন। আইএলস একটি আন্তর্জাতিক মানসম্মত পরীক্ষা। এখানে সেন্টারের মান খুব বেশি গরমিল হবার সম্ভাবনা নেই। আমি রেজিস্ট্রেশন করার পররপরই নীলক্ষেত থেকে কেমব্রিজের পুরো সেট ৩০০/৩৫০ টাকায় কিনে নেই। এরপর শুরু হয় আসল সাসপেন্স। প্রথম কয়েক দিন প্রাকটিসের পর পড়তে আর মন বসে না। মনে হয় পরীক্ষার তো অনেক দেরি। আরো চার মাস পরে। পরীক্ষার আগে পড়ব। শিক্ষার্থীদের যেমন হয় আর কী। চারটি মড্যুলে আমার প্রস্তুতি কেমন ছিল তা নিচে আলোচনা করছি।


রিডিং: আইএলমে রিডিং পার্টটি যথেষ্ট ক্রিটিক্যাল। এখানে উত্তর খুঁজে বের করা ও লেখা যথেষ্ট কঠিন বলেই আমার কাছে মনে হয়েছে। আমি আগে প্রশ্ন পড়ে তার পর উত্তর খুঁজে বের করেছি। ইয়েস, নো ও নট গিভেন নিয়ে আমার কনফিউশন ছিল। আমি সেটা ইউটিউব দেখে ঠিক করে নিয়েছিলাম।


এটা ছিল পরীক্ষার সময়কার কথা। আর পরীক্ষার আগে আমি কেমব্রিজের ১-৪ ও ৭-১১ 'র রিডিং প্যাসেজগুলো পুরোপুরিভাবে শেষ করেছি। আর শেষ করে দেখেছি ভুল কোথায় কোথায় হয়। সেভাবে ভুলগুলো শুধরে নেয়ার পদ্ধতি মনে রেখেছি। এক্ষেত্রে কেমব্রিজের পাশাপাশি আমাকে সাহায্য করেছে ieltsliz.com এই সাইটিটি অনেক সমৃদ্ধ। যে পরামর্শগুলো থাকে তা ফলো করলে মিনিমাম স্কোর ৬ আসার কথা। রিডিংয়ে আমি যথেষ্ট দুর্বল ছিলাম। আমি ডেইলি স্টার পড়তাম। একই সাথে মোবাইলে নিউইয়র্ক টাইমসের এ্যাপ নামিয়ে নিয়মিত তা পড়তাম। ঘুম না আসলে নিউইয়র্ক টাইমস, রিডার্স ডাইজেস্ট কিংবা গার্ডিয়ান পড়তাম। দ্রুতই ঘুম চলে আসত। ঘুমও হতো আর সাথে প্রস্তুতিও নেয়া হয়ে যেত।



রাইটিং:সবচেয়ে আমি অবহেলা করেছি রাইটিং পার্টটটাকে। চাকরি করার পর কোনকিছু আর লিখতে ইচ্ছে হতো না। কেমব্রিজের বই কিনে আনার পর একদিন দুটো এ্যাসে লিখেছি। এরপর পরীক্ষার আগে আর খবর নাই। পরীক্ষার ৭ দিন আগে এক দাওয়াতে গিয়েছি। সেখানে গিয়ে এক পরিচিতজনের সাথে দেখা। আলাপকালে জানতে পারলাম তার ব্যান্ড স্কোর ৭। মটিভেশন পেলাম কিছু করার। তিনি বললেন, রাইটিংয়ে কানেকটিং ওয়ার্ডগুলো মুখস্থ করতে যেমন consequently, apart from, in connecting to এই ধরণের ওয়ার্ডগুলো। মটিভেশন পেয়েও প্রাকটিস করার আর সুযোগ হয়নি। পরীক্ষার আগের দিন রাতে বার চার্ট কিংবা টেবিল লেখার জন্য কানেকটিং ওয়ার্ডগুলো মুখস্থ করলাম। পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখি ইউকেতে পুরুষের তুলনায় নারী শিক্ষার্থী বেড়েছে এমন একটা টেবিল এসেছে। পরে কানেকটিং ওয়ার্ডগুলো মিলিয়ে জাতীয় জীবনে নারীশিক্ষার গুরুত্ব রচনা লিখে দিয়েছি। আর দ্বিতীয় এ্যাসেতে এসেছিল রাস্তায় প্রাইভেট কার ভালো না গণপরিবহন ভালো। ওটাও পেরেছিলাম।



লিসিনিং:লিসেনিং প্রাকটিসটা করেই মজা লাগত। প্রথমে কেমব্রিজ শেষ করেছি। তারপর ইউটিউবে স্কাই আর ফক্স নিউজ লাইভ স্ট্রিমিং সাবস্ক্রাইব করলাম। পিসিতে বসে কাজ করতাম কানে হেডফোন লাগিয়ে। ফলে অবচেতন মনে লিসিনিংয়ের একটা অভ্যাস তৈরি হয়। যা পরীক্ষায় আমাকে অনেক হেল্প করেছে। এখানে আর কোন কিছু মিলিয়ে প্রস্তুতি নেইনি। পরীক্ষার হলে লিসেনিংয়ে গিয়ে দেখি কেমব্রিজ ১০ বা ১১ 'র একজন গম্ভীর গলার পুরুষ কন্ঠ এখানে কথা বলছে। আমাকে আর পায় কে। প্রাকটিস করার কারণে ভদ্রলোকের কথার পজ কিংবা উচ্চারণভঙ্গি আমার পরিচিত। তবে বোকামি করে ফেলেছি শেষ ১০ মিনিটে উত্তর তুলতে গিয়ে। কয়েকটার উত্তর ১০ মিনিটে মিসপ্লেস না করলে ৮ই আসত। তাই পরামর্শ হচ্ছে শোনার সাথে সাথে কয়েকটা উত্তর লিখে রাখলে শেষ ১০ মিনিটে তাড়াহুড়ো হবে না। আর লিসেনিংয়ে ৮/৮.৫ আসলে আপনার পুরো স্কোরটাই ভালো জায়গায় চলে আসবে। আমাদের রাইটিং কিংবা রিডিং খুব দ্রুত ডেভেলপ হয় না যতটা দ্রুত ডেভেলপ হয় লিসেনিং স্কিল। তাই লিসেনিংটাকে প্রাধান্য দিতে হবে।



স্পিকিং:

আর সবচেয়ে মজার প্রস্তুতি ছিল স্পিকিংয়ে। রেজিস্ট্রেশন করার পরই ঠিক করলাম বাংলা আর বলব না চার মাস। খাইতে. বসতে ইংরেজি বলা শুরু করলাম। বউকে নিয়ে গিয়েছি হানিমুনে। সেখানেও তার সাথে বাতচিত করেছি ইংরেজিতে। এরপর বউ বলা শুরু করেছে আমার আংরেজ জামাই, হানিমুনেও ইংরেজিতে কথা বলছে।

স্পিকিংয়ে ভালো করার সবচেয়ে ভালো উপায় একজন পার্টনার নিয়ে নেয়া। আবার ইংরেজি পারে না এমন পার্টনার নিলে লাভ নেই। একজন ভালো পার্টনারই পারে স্পিকিংয়ে ভালো স্কোর নিয়ে আসতে।


আমার পরীক্ষা ছিল ফিউচার এডে। সেজেগুজে ফর্ম্যাল ড্রেসে পড়ে গেলাম। ছবি তুলল। এসির মধ্যেও ঘামছিলাম। তিনবার আয়াতুল কুরসি পড়লাম। ডাক পড়ল একটু পর। এগজামিনার যথেষ্ট হেল্পফুল ছিলেন। প্রথমে কী করি না করি এসব জিজ্ঞেস করার পরার যুদ্ধ ময়দানে নিয়ে গেলেন। কাস্টমার কেয়ার নিয়ে প্রশ্নের পর প্রশ্ন। ১০/১২ মিনিট হবে মনে হয়। আটকাই নি। ব্যাংকগুলোতে কাস্টমার কেয়ার সার্ভিসের দুরাবস্থা নিয়ে বললাম। এগজামিনরার কয়েক বার মুচকি হাসি দিলেন। আই কন্ট্যাক্ট রেখে কথা বলছিলাম যাতে আত্মবিশ্বাসী মনে হয়। একসময় বললেন আপনাকে ধন্যবাদ।


স্পিকিংয়ে আমার মনে হয়েছে, আপনি থামবেন না বলার সময়, কনফিডেন্টলি বলতে থাকবেন, দুই একটা গ্রামার ভুল থাকবেই, বাট থামবেন না। চোখে চোখ রেখে কথা বলবেন। কখনো কখনো মুচকি হাসি দিবেন কথার মধ্যে। যাতে আলাপচারিতার মতো মনে হয়। আর বলার সময় আ-এ আ-এ করবেন না, যাতে এগজামিনার ভাবে আপনার দুর্বলতা আছে।


এই ছিল আমার প্রস্তুতি। আল্লাহর অশেষ রহমতে সেভেন এসেছে। আমার মনে হয়েছে আইএলস একটা কৌশলের পরীক্ষা। কৌশল ধরতে পারলে আর কোন সমস্যা নেই। একই সাথে গুরুত্বপূর্ণ হলো আত্মবিশ্বাসী হওয়া। কারণ আত্মবিশ্বাসই আপনার মনোবল বাড়িয়ে দেবে। বিদেশে পড়তে যাবার প্রথম ধাপ আইএলস স্কোর। একটি ভালো স্কোর খুলে দিতে পারে বিদেশে পড়তে যাবার আপনার স্বপ্নের দুয়ার।


লেখাটিতে ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আপনার জীবন শুভ হোক।