Tips for Preparing Your CV/Resume

This document is originally written by Mahmud Hasan, Writer & Poet (Western University).


Year of Publication: 2017


©PBSCU Any unauthorized use of this article, including copying or editing is prohibited. If you want to use the article, you need to take permission from us: pbscuadm@gmail.com or from the author and you must mention the author's name and the group's name in all cases.



Here are some online resources and samples that you can use:


1. https://www.e-education.psu.edu/files/styleforstudents/file/chapter%208/Resume3_new.pdf

2. http://www.resume-resource.com/exstu6.html

3. http://www.eduers.com/Graduate/Sample_Resumes.html

4. http://www.afterschoolafrica.com/2011/04/how-to-write-good-cvresume-as-fresh.html

5. http://www.cvrite.co.uk

6. http://www.greexplorer.com/Curriculum-Vitae.html

7. http://www.cvrite.co.uk/example-cv

8. http://myfootpath.com/mypathfinder/write-great-resume-cover-letter

9. http://gradschool.about.com/od/curriculumvita/a/Seven-Tips-For-Improving-Your-Curriculum-Vitae.htm



CV and Resume

আমার এক ছাত্রের অনুরোধে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য পাশকৃত গ্র্যাজুয়েটদের জন্যে আমি বেশ কিছু লেখা লিখেছিলাম ইউনিভার্সিটির একটা গ্রুপে। মূল লেখাগুলো লেখা হয়েছিল অক্টোবর ২০১৬ তে, এক বছর হয়ে গেছে। সেই লেখাগুলোর আবেদন ও প্রয়োজন আরও বিস্তৃত পরিসরে রয়েছে বলেই মনে করি। তাই লেখাগুলো ক্রমান্বয়ে এখানে শেয়ার করব।


আজ থাকছে প্রথম পর্ব।


(কিছু কিছু জায়গায় টেক্সটাইল/বুটেক্স থাকবে, যেহেতু লেখাটা আমি একটা ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের জন্য লিখেছিলাম, সেই জায়গাগুলোতে নির্দ্বিধায় নিজের সাবজেক্ট আর ইউনিভার্সিটির নাম বসিয়ে পড়তে পারেন। কোন সমস্যা নেই।)

===============================

শুভ আমাকে রিকোয়েস্ট করেছে আমি যেন কীভাবে রিজিউমে বা সিভি তৈরী করতে হবে সেটা নিয়ে কিছু লিখি এই গ্রুপে। আমি অত্যন্ত ব্যস্ত কয়েকটা দিন ধরে, তবু মনে হল আপাতত অল্প কথায় কয়েকটা বিষয় বলি, পরে ডিটেইলস লেখা যাবে।


প্রথমেই বুঝতে হবে যে একাডেমিক সিভি ও প্রফেশনাল সিভি এক জিনিস নয়, দু'টা একই ভাবে তৈরীও করা উচিৎ নয়। একাডেমিক সিভি হচ্ছে যেগুলো উচ্চ শিক্ষার আবেদনের জন্য তৈরী করতে হয়, আর প্রফেশনাল সিভি হচ্ছে যেগুলো সাধারণত চাকরি-বাকরির জন্য তৈরী করতে হয়। এর বাইরেও অনেক ধরণের সিভি হয়, সেটা একটু উঁচু লেভেলের বিষয়, কাজেই সেটা নিয়ে আলোচনা করছি না। মনে রাখতে হবে সিভি বা রিজিউমে কখনোই বায়ো-ডাটা নয়। বায়ো-ডাটার মতো নাম, পিতার নাম, প্রিয় রঙ, প্রিয় টয়লেট পেপার এইসব হাস্যকর তথ্য সিভি বা রিজিউমে-তে কেউ আশা করে না। এগুলো বায়ো-ডাটাতেই মানায় এবং সাধারণত বায়ো-ডাটা হচ্ছে তারকাদের কিছু ব্যক্তিগত তথ্য পত্রিকায় ছাপানোর জন্য ব্যবহার করার একটা বিষয় অথবা সাধারণ মানুষের বিয়ের ক্ষেত্রে একজন অন্যজনকে জানার জন্য ব্যবহার করার বিষয়। সিভি বা রিজিউমে হচ্ছে বাস্তব জীবনে নিজেকে প্রেজেন্ট করার জন্য ব্যবহৃত তথ্য-সারাংশ।


একাডেমিক সিভি/রিজিউমে অনেক রকম হতে পারে, আবার প্রফেশনাল সিভি/রিজিউমেও প্রফেশন ভেদে একেক রকম হতে পারে। যেমন, যেই মানুষটা আর্মি অফিসার পদের জন্য আবেদন করছে, সেখানে তার শারীরিক সক্ষমতাটাই মূখ্য, লেখাপড়া ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তিনি যদি সিভি/রিজিউমেতে হাইলাইট করেন যে- তাঁর একটি পিএইচডি ডিগ্রি আছে এবং এই ডিগ্রি থাকার জন্য তিনি নিজেকে একজন যোদ্ধা মনে করেন- এটা যেমন হাস্যকর, তেমনি যেই মানুষটা বৈজ্ঞানিক হতে চাওয়ার জন্যে আবেদন করছেন তিনিও যদি সিভি/রিজিউমেতে হাইলাইট করেন যে তাঁর সুঠাম দেহ, প্রতিদিন দশ কিলোমিটার তিনি এক দমে দৌড়াতে পারেন, সেটাও একই রকম হাস্যকর। আমার পয়েন্টটা হচ্ছে- পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের পেশা ভিন্ন। হ্যাঁ, ভুল লিখিনি- প্রতিটা মানুষেরই পেশা ভিন্ন। দু'জন একই বিষয় থেকে পড়াশোনা করলেই যে একই পেশা দুজনের হবে এমন কোন কথা নেই। এমনকি একই ধরণের কাজ দু'জন করলেও যে দু'জনের পেশা একই সেটা আমরা বলতে পারি না। প্রতিটা মানুষেরই একটা পেশাগত দক্ষতা আছে, যেটা একদমই ইউনিক। কাজেই যখন আপনি আপনার সিভি বা রিজিউমে তৈরী করবেন, আপনার উচিৎ চিন্তা করা- কেন আর দশ জনের থেকে এই পজিশনটির জন্য আমি আলাদা ক্যান্ডিডেইট, কেন আর দশটা সিভি/রিজিউমে বাদ দিয়ে আমার সিভি/রিজিউমেটাই নির্বাচকগণ দেখবেন এবং সেটা পড়বেন? আপনাকেই ঠিক করতে হবে আপনার অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলো আপনি এই পজিশনটির জন্য কীভাবে লিখবেন, আমি যেই সিভি/রিজিউমে বানিয়ে শিক্ষক পদের জন্য সফলতা পেয়েছি, আপনি সেই সিভি/রিজিউমে ফরম্যাট কপি করেই বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমে সুযোগ পাবেন- এমনটা আশা করাই ভুল। তাই একটি নিখুঁত সিভি/রিজিউমে তৈরীর প্রথম কথাই হচ্ছে- কোন ফরম্যাট বা টেম্পলেট ফলো করা যাবে না।


দ্বিতীয় কথা হচ্ছে- আপনাকে জানতে হবে আপনার সত্যিকারের দক্ষতাগুলো কী এবং সেই দক্ষতাগুলো কীভাবে আপনি যেই কাজের জন্য সিভি তৈরী করছেন সেই কাজে কীভাবে আপনাকে একজন পারফেক্ট ক্যান্ডিডেইট হিসেবে প্রমাণ করছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমি যখন শিক্ষক পদের জন্য আবেদন করেছি বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে, আমি আমার দক্ষতা হিসেবে লিখেছি- "আমার অন্যকে বুঝানোর ক্ষমতা খুব ভাল। যেহেতু অন্যকে কিছু একটা ভাল বুঝাতে হলে নিজেকে সেটা আরও ভাল মত বুঝতে হয়, কাজেই আমি যে কোন বিষয় বুঝতেও পারি খুব ভাল। আমার একাডেমি রেজাল্ট খুব ভাল, আমি একটা ইউনিভার্সিটিতে সর্বোচ্চ সিজিপিএ ধারী।"

আমি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন আবেদন করি, তখন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্ট বয় একই সাথে আবেদন করেছিলেন একই পদের জন্য। তিনি লিখেছিলেন- আমি শাহজালালের সর্বোচ্চ সিজিপিএ ধারী ছাত্র।


বলুন তো, কেন তাঁকে চাকরি না দিয়ে স্ট্যামফোর্ড কর্তৃপক্ষ আমাকে চাকরি দিয়েছিলেন? কারণটা খুবই সহজ- আমি এমন একটা কথা লিখেছি আমার দক্ষতা হিসেবে, যেটা নির্বাচকগণকে ভাবিয়েছে। এটাই হচ্ছে আর দশজন থেকে নিজেকে আলাদা করে ফেলা, একই শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার পরও। দয়া করে কেউ ভেবে বসবেন না আমি 'মুই কী হনু রে' টাইপ গপ্পো বলছি, আমি বাস্তব থেকে, একেবারে নিজের জীবন থেকে কেবল একটা উদাহরণ দিলাম আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে।

আজকে বেশি বড় করব না লেখাটা, তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টটি বলেই শেষ করছি। তৃতীয় পয়েন্টটি হচ্ছে অল্প অক্ষরে ভাব প্রকাশ করতে পারার ক্ষমতা। খেয়াল করুন, আমি বলিনি অল্প কথায়, বলেছি- অল্প অক্ষরে। অর্থ্যাৎ সিভি বা রিজিউমে তে আপনি যা-ই লিখুন না কেন, সেটা হতে হবে অল্প কয়েকটি শব্দে, কিন্তু প্রকাশ করতে হবে আপনি যা যা বলতে চাইছেন তার সবটুকুই। তথ্য মানুষের কাছে তুলে ধরার একটা বড় বিষয় হচ্ছে তথ্যের সংক্ষেপণ। আপনি যদি নিউজ পেপারে হেডলাইন লিখেন এভাবে যে- "ইমরুলের শতকেও পরাজিত বাংলাদেশ", যা বুঝা যাবে, যদি এটাও লিখেন- "সদা অবহেলিত বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েসের লড়াকু শতকের পরও ইংল্যান্ডের সাথে প্রথম ম্যাচে হেরে গেল বাংলাদেশ" প্রায় একই জিনিস বুঝা যাবে। আমাদের দূর্ভাগ্য যে আমাদের পরীক্ষা পদ্ধতি আমাদের অধিক কথা লিখতে শেখায়, টু দ্য পয়েন্ট লিখতে শেখায় না। কাজেই অনার্স-মাস্টার্স করেও আমরা জানি না কীভাবে অল্প কথায় গুছিয়ে একটা বড় বিষয়কে উপস্থাপন করা যায়। যাই হোক, প্রথম হেডলাইনটি বড় করে এক লাইনে ছাপানো গেলেও দ্বিতীয় হেডলাইনটি কিন্তু এক লাইনে ছাপাতে হলে ছোট করে ছাপাতে হবে। বলুন, কোনটা মানুষের নজরে আসবে বেশি?

তথ্য সংক্ষেপণ খুব জরুরী সিভি/রিজিউমে লেখার ক্ষেত্রে। আপনি বলতে পারেন- BSc in Textile Engineering (Major in Apparel Manufacturing Engineering), Bangladesh University of Textiles, Tejgaon, Dhaka-1211.

কী ক্ষতি যদি লিখেন- BSc in Textile (Apparel), BUTex?

বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত সেই তথ্য নিশ্চয়ই আপনি জানাতে চাচ্ছেন না, আপনি জানাতে চাচ্ছেন যে আপনি একজন টেক্সটাইল গ্র্যাজুয়েট। তাহলে এই কথাটা এত বড় করে লেখার কী দরকার? কে জানতে চেয়েছে বুটেক্সের পোস্টাল কোড কত? কে জানতে চেয়েছে এটা বেগুনবাড়ীতে নাকি নওয়াবপুরে? কেউ না। সবাই জানতে চেয়েছে আপনি আসলে কী পড়াশোনা করেছেন। হয়তো ভাবছেন, তাহলে তো রিজিউমে এক পৃষ্ঠাও হবে না! না হোক, সমস্যা কী?

আমাদের ধারণা আছে যে সিভি/রিজিউমে বেশি পৃষ্ঠার না হলে আমি কত বড় কাবেল সেটা মানুষকে বুঝানো যায় না। আসলে এটা খুবই ভুল ধারণা। গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেইজ তাঁর রিজিউমেতে একটি মাত্র লাইন লিখেছিলেন: I co-founded google.

যথেষ্ট লিখেছেন কি না তিনি?


সিভি আর রিজিউমে কী একই জিনিস?

আগের পোস্টে কিছুটা বলেছিলাম বায়ো-ডাটা জিনিসটা কীভাবে সিভি বা রিজিউমে হতে ভিন্ন। আজকে সংক্ষেপে বলব সিভি ও রিজিউমে এর মাঝে আসলে পার্থক্যটা কী?

এক কথায় বলতে গেলে সিভি যদি রচনা হয়, রিজিউমে তার সারাংশ বা সারমর্ম। অর্থ্যাৎ, সিভি সাধারণত অনেক বেশি তথ্য ধারণ করে, যেখানে রিজিউমেতে সেই সকল তথ্যের সংক্ষিপ্ত রূপ লিপিবদ্ধ করা হয়। আগেই বলে নিচ্ছি- এই লেখার মূলত পাঠক হচ্ছে সদ্য পাশ করা গ্র্যাজুয়েটগণ, যাঁদের জন্য আসলে সিভি বা রিজিউমে তে তেমন কোন পার্থক্য নেই। কারণ তাঁদের আসলে বলার মতো তেমন তথ্যই নেই, সেটার রচনাই কী আর সারমর্মই কী! কাজেই, এই লেখার বাকি অংশ কেউ পড়তে না চাইলেও সমস্যা নেই। যাঁরা আরও একটু গভীরে জানতে চাচ্ছেন, তাঁদের জন্যে আমি দুয়েকটা উদাহরণ দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করব সিভি আর রিজিউমের মাঝে পার্থক্য কী এবং একজন মানুষ কখন সিভি ব্যবহার করবে বা কখন রিজিউমে ব্যবহার করবে।


আগের পোস্টে বলেছি যে, দু'টি ভিন্ন পেশার মানুষ একই রকম ভাবে সিভি তৈরী করতে পারে না। উদাহরণ হিসেবে বলেছিলাম- একজন সায়েন্টিস্ট তাঁর সিভিতে গুরুত্ব দিবেন তাঁর গবেষণাকর্মকে, শারীরিক সক্ষমতাকে নয়। অপরদিকে একজন সেনাবাহিনীর চাকুরীপ্রার্থী তাঁর সিভিতে গুরুত্ব দিবেন তাঁর শারীরিক সক্ষমতাকে, গবেষণাকর্মকে নয়। কাজেই যাঁরা এই সিরিজের লেখাগুলো ফলো করছি তাঁরা অন্তত এইটুকু জানি যে, পৃথিবীর অন্য কারও সিভি বা রিজিউমে দেখে দেখে নিজের সিভি বা রিজিউমে বানিয়ে ফেলা যেন পুলিশের পোশাক দেখে দেখে বিয়ে করতে যাওয়ার শেরওয়ানি বানানো! তাহলে দুজন মানুষের পরিচয় যেমন ভিন্ন, সিভিও তেমন ভিন্ন হবে। একইভাবে, সকল মানুষের জন্যই সিভির প্রয়োজন নেই, বেশিরভাগ মানুষের জন্যই আসলে প্রয়োজন রিজিউমে। আপনারা, সদ্য পাশকৃত গ্র্যাজুয়েটগণ, মূলত যেটা চাকরির জন্য জমা দিচ্ছেন সেটা হচ্ছে রিজিউমে। কিন্তু ধরুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ভিসি পদের জন্য আবেদন করছেন। তিনি কী জমা দিবেন? রিজিউমে না সিভি?

তিনি যেটা দিবেন সেটার নাম হচ্ছে সিভি। কারণ, আগেই বলেছি, সিভিতে অনেক বেশি বিস্তারিত তথ্য লেখা থাকে যেটা রিজিউমে তে থাকে না। যেমন, সেই প্রার্থী হয়তো তাঁর রিজিউমে তে কেবল লিখতে পারেন- প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সংখ্যা- ১৫। কিন্তু সিভিতে কেবল সেটার সংখ্যা লিখলেই হবে না, সেই গবেষণাপত্র কোথায় প্রকাশিত হয়েছে, সেটার কী নাম, পৃথিবীর জ্ঞানের ভুবনে সেই গবেষণাপত্রের অবদান কতটুকু সেগুলোও লিখতে হবে। ভেবে দেখুন- ১৫টি গবেষণাপত্রের নাম ও প্রকাশনা সংক্রান্ত তথ্য লিখতে গেলেই কিন্তু অন্তত ৬-৭টি পৃষ্ঠার প্রয়োজন, কিন্তু ১৫ সংখ্যাটি লেখার জন্য প্রয়োজন কেবল দু'টি অঙ্ক! কাজেই সিভি যদি রচনা হয়, তবে রিজিউমে হচ্ছে তার সারাংশ বা সারমর্ম। বুঝাতে পারলাম?


সেই অধ্যাপক কিন্তু কেবল তাঁর গবেষণাকর্মই উল্লেখ করবেন না তাঁর সিভিতে, তিনি প্রশাসনের কী কী পদে ছিলেন সেটাও বিস্তারিত উল্লেখ করতে হবে তাঁকে। যেমন, তিনি হয়তো বলতে চাচ্ছেন, আমি ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের, বিভাগীয় প্রধান ছিলাম। শুধু এই তথ্যটুকু লিখলে হয়তো তিনি সেটা রিজিউমে তে লিখবেন, কিন্তু সিভিতে তাঁকে বলতে হবে সেই বিভাগে কী কী প্রশাসনিক দায়িত্ব তাঁকে পালন করতে হয়েছে তার বিস্তারিত।


নিজে শিক্ষক হওয়ার কারণে শুধু শিক্ষকতা নিয়ে উদাহরণ দেয়া হয়, এটা ঠিক নয়। আসুন ভিন্ন একটা উদাহরণ দেখি। ধরা যাক আমাদের বুটেক্সের জন্য একটা ছাত্রাবাস তৈরী করা হবে। সেটা কে করবে? ভিসি? নাকি অন্য শিক্ষকগণ? নাকি ছাত্ররা? নিশ্চয়ই না। এই কাজটা যিনি করবেন তাঁকে সহজ ভাষায় 'ঠিকাদার' বলা হয়। ঠিকাদার শব্দটা শুনতে হালকা লাগলেও কাজটা মোটেই হালকা নয়, বরং ঠিকাদারী ভয়াবহ রকম চ্যালেঞ্জিং ও গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ। ভেবে দেখুন, কেন একটা ব্রিজ বা ফ্লাইওভার বানানোর জন্যে জাপান-কোরিয়া-চায়না থেকে ঠিকাদার আনা লাগে? কারণটা সহজ, যত বড় স্ট্রাকচার, ততটাই কঠিন সেটার আর্কিটেকচার ও ইঞ্জিনিয়ারিং। আমাদের দেশের নির্মাণ প্রযুক্তি ততটা আধুনিক এখনও নয়, তাই এইসব কাজের জন্য বাইরে থেকে ঠিকাদার নিয়ে আসা লাগে। আপনার কী ধারণা? তাঁরা পড়াশোনা না করেই 'ঠিকাদারী' করেন? কখনোই না। আপনাকে আমাকে একটা ব্রিজের পিলার বানাতে দিলে পারব? ভেবে দেখুন কতটা রেসপনসিবিলিটি তাঁরা মাথায় নিয়ে কাজ করেন- ব্রিজ বা ফ্লাইওভারের একটা টুকরোও যদি ভেঙে পড়ে, কতগুলো মানুষের জীবন সংশয় হবে সেখানে? কাজেই এটা মোটেই হালকা কাজ না। প্রচুর প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিদ্যার প্রয়োজন সেখানে হয়। সে যাই হোক, ছাত্রাবাস বানানো তেমন জটিল প্রযুক্তির কাজ নয়, এটা সহজ কাজ, কাজেই দেশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোই এটা করতে পারবে। আমাদের ভিসি কী করবেন প্রথমে? বা এরকম যে কোন কাজে প্রথমে কী করা হয়? একটা দরপত্র আহবান করা হয় এই বলে যে- আমাদের ইউনিভার্সিটিতে আমরা একটা পাঁচ তলা ছাত্রাবাস বানাতে চাই। আপনাদের কার কার কী কী এই ধরণের কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে সেটা জানিয়ে এবং এই কাজ করতে আপনারা কত টাকা নিবেন সেটা জানিয়ে আবেদন করুন। আসলে দরপত্রে এই অল্প কয়টা কথাই থাকেনা, অনেক বিস্তারিত লেখা লাগে, আমি আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে ছোট করে লিখলাম। তো এই দরপত্র পেয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো কী করেন? ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাঁরা তাঁদের কাজের একটা সিভি জমা দেন। যেমন, আমি যদি কাজটা নিতে আগ্রহী হই, আমি হয়তো বলতে পারি- আমি বুয়েটে একটা একই ধরণের পাঁচ তলা ছাত্রাবাস তৈরী করেছি যার বিস্তারিত হচ্ছে এই এই। এটা সিভি। আর যদি বলি- আমি এর আগে বুয়েটে একটা পাঁচ তলা ছাত্রাবাস তৈরী করেছি তাহলে সেটা হচ্ছে রিজিউমে।


মূল কথা যেটা বুঝাতে চাইলাম সেটা শুরুতেই বলেছি- সিভি হচ্ছে আপনার প্রতিটি কাজের প্রয়োজনীয় বিস্তারিত বর্ণনা, রিজিউমে হচ্ছে কেবল সেটার সারাংশ। লক্ষ্য করুন, আমি লিখেছি- প্রয়োজনীয় বিস্তারিত, শুধু বিস্তারিত নয়। তার মানে অপ্রয়োজনীয় ডিটেইলস লেখা যাবে না। যেমন, আগেই বলেছি যে আপনাদের মতো যাঁরা ফ্রেশার, তাঁদের জন্য সিভি আর রিজিউমের মাঝে কোন পার্থক্য আসলে নেই; তবু যদি আপনাদের মাঝে বেশি কাবেল কেউ সিদ্ধান্ত নেন- ওকে, স্যার তো বুঝিয়ে বললেন সিভি আর রিজিউমে কী, আমি তাহলে একটা সিভিই বানাব। আপনার রিজিউমে তে যেখানে লেখা আছে বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, আপনি সেটার বিস্তারিত লেখা শুরু করলেন এইভাবে- কী কী কোর্স করেছেন, কোনটাতে কত পেয়েছেন, বিশেষত টেক্সটাইলের ফান্ডামেন্টাল সাবজপক্টগুলোতে ল্যাবে কত পেয়েছিলেন, ক্লাস টেস্টে কত পেয়েছিলেন এইসব লিখে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ভরে ফেললেন। তাতে আপনার হয়তো ধারণা হলো আপনি বেশ দশাসই একটা সিভি বানিয়েছেন, কিন্তু বিশ্বাস করুন, সেটা চাকরির জন্য যেখানেই দিবেন তাঁরাই ভাববে- এই পাগলকে চাকরি দেয়ার মানেই হয় না!


নিজেকে সবাই প্রকাশ করতে চায়, ফেসবুকের যুগে সেটা আরও বেশি। কিন্তু মনে রাখতে হবে, নিজেকে প্রকাশ করার আগে সেই প্রকাশ করার যোগ্যতা অর্জন করা লাগে। ষোল বছর পড়াশোনা করে সিভি বা রিজিউমেতে লেখার মতো কেবলমাত্র একটি লাইন আপনার আছে এখন- বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং। তাহলে একটা সত্যিকারের সিভি লেখার জন্য আপনাকে কী পরিমাণ কাজ করতে হবে সেটা মনে মনে কল্পনা করুন। ফেসবুকে- আজ থেকে আমি ইঞ্জিনিয়ার- লিখে লাইক কিছু পাওয়া যায় সত্যি, তবে জীবনে সেটা সত্যিকার অর্থে কোন কাজে আসে না। জীবনে শর্টকাট বলে কিছু নেই। রিজিউমেতে যদি আরেকটা লাইন লিখতে চান, অন্তত আরও দুই বছর পড়তে হবে বা এক বছর চাকরি করতে হবে।


তাহলে, রিজিউমে কে যদি সিভিতে রূপ দিতে চান, কত বছর ক্যারিয়ার নিয়ে পরিশ্রম করতে হবে?