Nazmul

Written by Nazmul Hasan

M.Sc. in Statistics, University of Saskatchewan. 

Full Story here: https://www.facebook.com/groups/BSAAC/permalink/1440143366024229


©PBSCU This document is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-ShareAlike 4.0 Unported License. This license allows you to use, share and modify the document for noncommercial purposes only as long as it is redistributed under the same license and attribution to this work is made according to the license rules. We request that you cite the original writer’s name and the group’s name in all cases.



একজন ব্যাকবেঞ্চারের কানাডা আসার গল্প

মানুষের জীবনের কোন অংশকে কিছু শব্দ দ্বারা সজ্জিত কয়েকটি বাক্যের মাধ্যমে প্রকাশ করা কঠিন। তারপরেও নিজেকে উপস্থাপনের একটা ব্যর্থ চেষ্টা করা যেতেই পারে। আসলে আমার কানাডায় আসার ব্যপারটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনার মত। কারন অন্যদের মত আমার একাডেমিক প্রোফাইল এত সমৃদ্ধ ছিল না। পড়ার চেয়ে খেলার প্রতি বেশি মনযোগের কারনে দশম শ্রেণি পর্যন্ত তার কোন প্রভাব না পরলেও দুইটা পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলই খারাপ হয়। মজার বিষয় হল, ছোটবেলা থেকেই চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী আমার বাবা-মাও আমাকে একটি নির্দিস্ট পেশায় (ডাক্তারী) দেখার ইচ্ছা নিয়ে বড় করে। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল ভিন্ন। শেষ পর্যন্ত কারও ইচ্ছাই পূরণ হয় নি। পরিস্থিতির শিকার হয়ে আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করি। সেখানেও বলার মত কিছু করতে পারিনি। তারপর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষাতে অংশ নিতে থাকি। চাকরি কেনা বেচার রমরমা বাজারে সরকারি চাকরি কিনে সরকারের চাকর হওয়ার ইচ্ছে না থাকায় সেখান থেকে সরে আসি। সেটা ছিল সাল ২০১৫।


ইতিমধ্যে আমি বিয়ে করি এবং বিয়ের কিছুদিন পরই আমার স্ত্রী স্টাডি পারমিট নিয়ে কানাডায় পড়তে চলে আসে। তার সাথে আমি টিআরভির আবেদন করি কিন্তু আবেদন রিজেক্ট হয়। ফলে চরম হতাশার মধ্যে পরে যাই। স্ত্রীর মাধ্যমে PBSCU গ্র“পের সাথে আগে থেকেই পরিচিত ছিলাম। ও যখন ভিসার আবেদন করে তখন থেকেই এখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করতাম। সবসময় তাদের পোস্ট গুলো দেখতাম। তারপর ওপেন ওয়ার্ক পারমিট বা টি আর ভি তে কিভাবে আবেদন করা যায় সেখান থেকে দেখে প্রস্তুতি নিতে থাকি। 


আমার ইচ্ছে ছিল টিআরভি তে কানাডায় এসে সুযোগ বুঝে নিজের পছন্দের বিষয়ে পড়া শুর“ করব। এরমধ্যে হঠাত একদিন শুনি আমার স্ত্রী আমাকে না জানিয়ে আমার মার্ক সীট স্ক্রীনিং এর জন্য পাঠায় ইউনিভার্সিটি অফ সাস্কাচুয়ান এ যেখানে সে অধ্যয়নরত। প্রাথমিক ভাবে তারা আমাকে সবুজ সংকেত দেয় আবেদন করার জন্য কিন্তু ফান্ডিং কিংবা ভর্তির কোন নিশ্চয়তা পাই না। তারপর আমি সেখানে আবেদন করি কিন্তু কোন প্রফেসরের সাড়া পাই না। তারা কারন দশায় তাদের কাছে পর্যাপ্ত ফান্ড নেই বলে আমাকে নিতে পারে নি। আর তারা এখানে ফান্ড ছাড়া কাউকে নিবেও না। নেগেটিভ জবাব পাওয়ার সপ্তাহ খানেক পর দুইজন প্রফেসর তাদের কাছে ফান্ড আছে বলে আমাকে নিতে আগ্রহ দেখায়। আমি একজনকে বেছে নেই আমার পছন্দের বিষয়ের উপর। আমার ফান্ডিং, এডমিশন ও প্রফেসর নিশ্চিত হওয়ার পর শুর“ হয় এক অবিশ্বাস যাত্রা। PBSCU সাথে যুক্ত থাকায় ভিসার জন্য সঠিক ভাবে কাগজপত্র সংগ্রহ করা আমার জন্য কঠিন কিছু ছিল না। 

এই গ্র“পের প্রতিটা ফাইল ঠিক মত মনযোগ দিয়ে পরলে একজন ছাত্রের জন্য কানাডার বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি থেকে শুর“ করে ভিসা প্রাপ্তি পর্যন্ত — সকল কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করা কঠিন কিছু না। পরবর্তীতে ছাত্র ছাত্রীরা কানাডায় আসার পরও নানান ভাবে গ্র“প থেকে সাহায্য পেয়ে থাকে। এর কারন এখানে সবাই নিরঃসার্থ ভাবে কাজ করে, আর এটা করে তারা আনন্দও পায়। আমি ভিসার জন্য আবেদনের ৩০ দিনের মাথায় মেডিকেল কল পাই এবং ৮৬ দিনের মাথায় ভিসা পাই। ঐ সময়ে আমি সারাক্ষণ গ্র“পের পোস্ট গুলোতে চোখ রাখতাম। তখন ছোট ছোট এই বিষয় গুলো আমাকে মানসিক ভাবে শান্তি দিত। কারন, আমার ও আমার পরিবারের জন্য ঐসময় টুকু ছিল চরম বিভীষিকাময়। নানা ধরনের নেগেটিভ চিন্তা মাথায় ঘুরত। আর সাথে সাথে আমাদের এডমিন মার“ফ ভাই কে জিজ্ঞাসা করতাম। আর ভাই যখনই সময় পেতেন সম্ভাব্য সমাধান দিতেন। তাই PBSCU ও মার“ফ ভাইয়ের প্রতি আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আমি গর্বিত এই পরিবারের সদস্য হিসেবে।

PBSCU এর সবাই কে জানাই আগামীদিনের সাফল্যের জন্য অগ্রীম শুভেচ্ছা।